ডিএমপি নিউমার্কেট থানায় দায়ের হওয়া হকার (পাপশ বিক্রেতা) শাহজাহান আলী হত্যা মামলায় গত মঙ্গলবার গ্রেপ্তার করা হয় সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে। গত বুধবার তাদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। তারা এখন ডিবি হেফাজতে আছেন। যে মামলায় তারা রিমান্ডে আছেন ওই মামলায় কোনো আসামির নাম নেই। তবে অজ্ঞাতনামা হিসাবে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। সদ্য বিদায়ী সরকারের প্রভাবশালী এই উপদেষ্টা ও মন্ত্রী। রিমান্ডের প্রথম দিনের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দেশে অনাকাক্ষিত পরিস্থিতি তৈরির জন্য দায় চাপাচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ওপর।
হেফাজতে থাকা সালমান ও আনিসুল দুজনই তিন বেলাই ডিবির সরবরাহ করা খাবার খাচ্ছেন। খাবার তালিকায় আছে সকালে ডাল, রুটি, সবজি এবং দুপুরে ও রাতে ভাত, মাছ-মাংস, ডাল, সবজি। ডিবিতে তাদের রাখা হয়েছে, সাধারণ অপরাধীদের মতো। এক্ষেত্রে তারা কোনো বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন না। তাদের চাহিদা অনুযায়ী, ওষুধ ও কাপড়চোপড় বাইরে থেকে দেওয়া হয়েছে।
ডিএমপির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারকৃতদের অপরাধ শুধু পুলিশ কেইসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। শেয়ারবাজারসহ অনেক অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত সালমান এফ রহমান। সরকারের অনেক অপকর্মকে আইনি বৈধতা দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছেন আনিসুল হক। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হত্যা মামলার পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও আইনগত বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সূত্র জানায়, যে মামলায় সালমান-আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে, সেই মামলায় আসামি হিসাবে তাদের নাম নেই। যাদের অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে এজাহাদের তাদের বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের লোক বলা হয়েছে। তাহলে কী সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট?
এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, মামলা হলো- ফাস্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট। তদন্তের পরই প্রকৃত সত্য উঠে আসবে। যিনি এফআইআর করেন তিনি তার মতো করে ঘটনা বর্ণনা করেন। ওনি যা জানেন তাই প্রাথমিকভাবে উল্লেখ করেন। এজন্যই সেটির নাম প্রাথমিক তথ্য বিবরণী। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা উঠে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো এমনিতেই হয়নি। কী কারণে ঘটেছে, কেন ঘটেছে সবই তদন্তে উঠে আসবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা নিশ্চয়ই মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। কেবল একটি-দুটি মামলায় তারা সংশ্লিষ্ট নয়। সারা দেশে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে। ওইসব ঘটনায় গ্রেফতারকৃতদের কী ধরনের সংশ্লিষ্টতা ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক বিভিন্ন অপকর্মের হোতা। অপরাধ করেও এতদিন তারা বহাল তবিয়্যতে ছিল। ১৫ বছরে মানুষ তাদের হাতে নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছে। এবার তারা পার পাবেন না।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হক এখনো ট্রমার মধ্যে আছেন। তারা বুঝতেই পারেননি যে, এত দ্রুত সরকার পতন হয়ে যাবে।
জিজ্ঞাসাবাদে আনিসুল হক বলেন, দেশে ছাত্র অন্দোলন শুরু হওয়ার পর আমি একটি সমাধানের দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। আন্দোলন দমনে তারা খুবই এগ্রেসিভ ছিলেন। এছাড়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও বাস্তবতা বোঝানো যাচ্ছিল না। এ কারণে আন্দোলন এক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। সালমান এফ রহমান এবং আনিসুল হককে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় ডিবির এক কর্মকর্তা দুজনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও লুটপাটের কারণেই দেশের এই অবস্থা। এ সময় তারা ছিলেন নির্বিকার।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
ছাত্র আন্দোলন
সমাধান হয়নি দুই মন্ত্রীর জন্য রিমান্ডে আনিসুল হক
- আপলোড সময় : ১৭-০৮-২০২৪ ০১:৫৭:৪৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১৭-০৮-২০২৪ ০১:৫৭:৪৯ অপরাহ্ন
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ